দ্যা বেঙ্গল ট্রিবিউন: বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুন্ডুর মর্মান্তিক রহস্য মৃত্যুর ঘটনায় উত্তপ্ত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। গত ৯ আগস্ট যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলের পাশ থেকে নগ্ন অবস্থায় তার দেহ উদ্ধার করা হয়। এদিকে এই মৃত্যুর ঘটনার পর থেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিং ও তার পিছনের “বাম দাদা” দের ভয়ঙ্কর সব তথ্য একের পর এক উঠে আসছে।
ভুক্তভোগী স্বপ্নদীপের বাবা মা র্যাগিংয়ের অভিযোগ তুলেছে। র্যাগিং ছাড়াও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও বেশ কিছু তথ্য উঠে এসেছে। সাধারণভাবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় বামেদের গড় বলে প্রচলিত। সাধারণ ছাত্রদের অভিযোগ, হোস্টেলে বিভিন্ন বয়স্ক সিনিয়র দাদাদের হুকুম চলে, এবং এই দাদারা প্রায় সবই বাম রাজনীতির সাথে জড়িত। হোস্টেলে র্যাগিং এর নামে সেখানে গ্রাম, মফস্বল ও শহরতলি থেকে উঠে আসা সাধারণ ছাত্রদের ওপর চলে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার।
কিন্তু এতে প্রশ্ন আসে যে, আরও তো এমন অনেক ছাত্র রয়েছে যারা র্যাগিং এর শিকার হয়নি। তবে কীভাবে র্যাগিং এর ভিক্টিম নির্ধারণ করা হতো? অভিনেতা অরিত্র দত্ত বণিকের ফেসবুক স্ট্যাটাসে প্রকাশিত ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে এই প্রশ্নের উত্তরের আভাস পাওয়া যায়। তিনি লিখেছেন,
“ছয় বছর এখানে ছাত্র হিসেবে কাটানোর পরে বুঝেছি, এখানে একটা উদ্ধত পরিবেশ আছে যেখানে আপনার ভাষা, সংস্কৃতি, প্রাপ্ত নম্বর, কথা বলার ধরন, লিঙ্গ, পোশাক, রাজনৈতিক আদর্শ, ধর্মীয় বিশ্বাস এই সকল বিষয়ের ভিত্তিতে ছেলেমেয়েদের যথেষ্ট জাজ করা হয়, প্রত্যক্ষভাবে না হলেও প্রতিমুহূর্তে একজন দুর্বল ছাত্রকে ক্রমাগত একা করে দেওয়া হয় সবথেকে হতাশাজনক বহু শিক্ষক নিজেও ক্লাসে বসে সেই কাজ করেন।”
স্বপ্নদীপের মৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যেই সৌরভ চৌধুরী নামক এক বাম নেতাকে আটক করেছে পুলিশ। সৌরভ চৌধুরী যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সক্রিয় বাম কর্মী৷ এছাড়াও তার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে তা নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে। স্বপ্নদ্বীপের সহপাঠী আদিত্য পাল্লেই এর কাছ থেকে জানা যায়, স্বপ্নদীপ বেশ হাসিখুশি, মেধাবী ও ধার্মিক ছাত্র ছিল। ফলে ধারণা করা হচ্ছে যে, স্বপ্নদীপকে এই কারণেই বাম নেতারা র্যাগিং এর টার্গেট হিসেবে বেছে নিয়েছিল।
অভিযুক্ত বাম নেতা সৌরভ চৌধুরী।
স্বপ্নদীপের ঘটনার পর মল্লিকা চ্যাটার্জি নামক এক কর্মজীবী নারী ফেসবুক স্ট্যাটাসে তার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে অতীত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন। একটি প্রজেক্টে কাজ করতে গিয়ে সেখানে কীভাবে স্টুডেন্ট ইউনিয়নের দ্বারা বিভিন্নভাবে হুমকিধামকি ও চাপের শিকার হয়েছেন, সেই অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন তিনি৷ স্বপ্নদীপের ইস্যুতে তৃণমূল থেকে বিজেপি, সকলেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাম ইকোসিস্টেমকে দায়ী করছে। রাজ্যজুড়ে সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যপক ক্ষোভ বিরাজ করছে। অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি সহ, আর কেউ যেন এই ইকোসিস্টেমের শিকার না হয় এমনটাই দাবী করছেন নেটিজেনরা।