Artificial Intelligence নিয়ে তো আমরা কত কিছুই শুনি, শিখি, জানি। কিন্তু এটা জানি কি যে আজ থেকে প্রায় ষাট বছর আগে এক বাঙালি তরুণ এই বিষয়ে গবেষণা করতে গিয়েছিলেন শিকাগো? এবং সম্ভবত উনি প্রথম বাঙালি ছিলেন যিনি এই বিষয়ে PhD করেছিলেন।
এই বাঙালি ভদ্রলোকের একটা নয়, অনেক গুলো পরিচয় আছে। আজ আমরা তাঁর ব্যাপারে জানব।
ইনি হলেন ডঃ সুমিত রায়। বৈজ্ঞানিক ও অধ্যাপক ছাড়াও এনার একটা পরিচয় হল ইনি অভিনেতা বিকাশ রায়ের পুত্র।
ডঃ সুমিত রায় মিত্র ইনস্টিটিউট থেকে স্কুল ফাইনাল পাশ করেন, তারপরে প্রেসিডেন্সি থেকে I.Sc করেন। তারপরে ভর্তি হন শিবপুর বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে।
১৯৬০ সালে শিবপুর থেকে পাশ করে উনি বছর চারেক কলকাতাতেই চাকরি করেন। ১৯৬৪ সালে আমেরিকার ইলিনয় ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে সুযোগ পান PhD করার। তাও আবার Artificial Intelligence নিয়ে। ১৯৬৯ সালে পাশ করে চাকরি করেন বেল ল্যাবরেটরি সংস্থায়।
বেল ল্যাবে মাইক্রো প্রসেসর নিয়ে দীর্ঘদিন বৈজ্ঞানিক গবেষণায় কাটান। দীর্ঘ তিরিশ বছর কাজ করে সেখান থেকে অবসর নেন।
তারপরে আরেক বাঙালি ডঃ আলোক চক্রবর্তীর ডাকে সাড়া দিয়ে জয়েন করেন নিউ জার্সি ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি তে, Management Information System এর প্রফেসর হিসাবে। দীর্ঘদিন রিসার্চ লাইনে চাকরি করার পরে আবার বহুদিন পড়ান।
নিউ জার্সির ব্রিজওয়াটার আর নিউ ইয়র্কের বার্ট শহরের মধ্যে সময় ভাগ করে থাকতেন উনি। নিউ জার্সির বিভিন্ন বাঙালি সংগঠনের সাথেও যুক্ত ছিলেন। আমেরিকায় থেকেও তিনি নিয়মিত রবীন্দ্র সঙ্গীত চর্চা ও সাহিত্য চর্চা করেছেন। এছাড়া আমেরিকার প্রবাসী বাঙালিদের অবসর পত্রিকার সাথেও যুক্ত ছিলেন।
শিকাগো, নিউ জার্সি আর বার্ট, সব জায়গায় বাঙালিদের একরকম গার্জেনের মতন সাহায্য করেছেন।
২০১২ সালে কলকাতা বইমেলায় প্রকাশ পায় তাঁর লেখা পোনুসংহিতা ও অন্যান্য অকথা। তাঁর দীর্ঘদিন যাবত বন্ধু ছিলেন একেনবাবুর লেখক প্রয়াত ডঃ সুজন দাশগুপ্ত।
২০২১ সালে ডঃ সুমিত রায় চিরকালের জন্য ইহজগৎ ছেড়ে চলে যান, রেখে যান রিসার্চ, অধ্যাপনা ও বাঙালিয়ানায় নিজের লম্বা লেগেসি।
লেখা: অভিষেক ভৌমিক, হিজিবিজি।