দ্যা বেঙ্গল ট্রিবিউন: চন্দ্রযান ৩ এর সাফল্য নিয়ে এখনও গোটা দেশ আনন্দে ভাসছে। মহাকাশ গবেষণার ইতিহাসে পৃথিবীর প্রথম দেশ হিসেবে চাঁদের সবচেয়ে দুর্গম প্রান্ত দক্ষিণ মেরুতে নামতে সক্ষম হয়েছে ইসরো (ISRO) তথা ভারত। ভারতীয় বৈজ্ঞানিকদের এই বিরল অর্জনে খুশি গোটা দেশ। কিন্তু এরই মধ্যে, এমনই এক খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে, যা শুনে ভারতবাসী গর্বিত হওয়ার সাথে সাথে দুঃখও পেয়েছে। কিন্তু সেই খবরের সত্যতা আদতে রয়েছে কী নেই, সেই বিষয়ে মুখ খুলেছে খুব কম গণমাধ্যমই।
ইসরোর (ISRO) চন্দ্রযান ৩ মিশন সফল হওয়ার খবরের পাশাপাশি আরও একটি এরূপ খবর প্রচারিত হতে থাকে যে, ইসরোর বৈজ্ঞানিকরা গত ১৭ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। ফলে চন্দ্রযান ৩ মিশন সফল হওয়ার আনন্দের মাঝে জনমানসে এক বিতর্কের সৃষ্টি হয়। এই দাবীর সূত্র হিসেবে আপাতত কংগ্রেস নেতা দিগবিজয় সিংয়ের নাম বারবার উঠে আসছে। চন্দ্রযান ৩ এর সফলতার বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতি দাবি জানান যে ইসরোর (ISRO) বিজ্ঞানীরা গত ১৭ মাস ধরে বেতন পাচ্ছে না, বিষয়টির দিকে যেন আলোকপাত করা হয়।
ইসরো (ISRO) টিমের সাথে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
এদিকে প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো (PIB) এর ফ্যাক্ট চেকিংয়ের মাধ্যমে জানা গিয়েছে যে, ইসরোর বিজ্ঞানীদের ১৭ মাস বেতন না পাওয়ার এই দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এতে আরও উঠে এসেছে যে, প্রতি মাসের শেষ তারিখে ইসরোর (ISRO) বিজ্ঞানীরা তাঁদের বেতন পান। প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরোর (PIB) এই ফ্যাক্ট চেকিংয়ের মাধ্যমে এটা পরিষ্কার যে, ইসরোর বিজ্ঞানীদের বেতন না পাওয়ার এই দাবি আপাতত রাজনৈতিক অভিসন্ধি ছাড়া কিছুই নয়। তবে এই বিতর্কের উৎস কংগ্রেস নেতা দিগবিজয় সিংকে আপাতত মনে হলেও, এই বিতর্কিত দাবির উৎস অন্য কেউ।
বেশ কিছুদিন আগে ‘The Ranveer Show podcast’ এর অতিথি হয়ে এসেছিলেন উদ্যোক্তা ও পলিটিক্যাল অ্যানালিস্ট তেহসিন পুনাওয়ালা। সেই অনুষ্ঠানে তিনিই প্রথম দাবি করেছিলেন যে, ইসরোর (ISRO) বিজ্ঞানীরা ৩ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। কিন্তু প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো ফ্যাক্ট চেকিংয়ে জানায় যে, এই দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা। মূলত তেহসিন পুনাওয়ালার এই বক্তব্যকে পুঁজি করেই দিগবিজয় সিং বিজ্ঞানীরা ১৭ মাস বেতন না পাওয়ার দাবি করেন, এমনটাই ধারণা করা হচ্ছে। যদিও ফ্যাক্ট চেকিংয়ে এটি পরিষ্কার যে, এই সকল দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
এর ফলে, প্রচলিত গণমাধ্যমগুলোর একটি অংশের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কেননা ফ্যাক্ট চেকিং ছাড়াই ইসরোর (ISRO) বিজ্ঞানীরা বেতন পাচ্ছেন না, এমন খবর প্রচার করাটা দায়িত্বজ্ঞানহীনতা ও অপেশাদারিত্বের লক্ষণ এবং একই সাথে তা জনসাধারণের আস্থার সাথে দ্বিচারিতা। এমনটা চলতে থাকলে গণমাধ্যমের ওপর থেকে মানুষ বিশ্বাস হারাবে, এমনটাই মতামত নেটিজেনদের।