দ্যা বেঙ্গল ট্রিবিউন: আমরা অনেকেই সামনে বিপদ দেখলে ধৈর্যহারা হয়ে যাই। অনেক সময়ে নিজের প্রতি আবার অনেক সময়ে দেখা যায়; নিজের প্রতি বিশ্বাসহারা হয়ে ঈশ্বরের প্রতিও বিশ্বাস হারিয়ে ফেলি।কিন্তু আমরা যদি গভীরভাবে আমাদের শাস্ত্রগ্রন্থের দিকে দৃষ্টি দেই তাহলে দেখতে পাব যে, আমরা যদি সর্বদা ঈশ্বরের পথে থাকতে পারি ; তবে ঈশ্বর স্বয়ং নিজেই সর্বদা আমাদের সকল বিপদ থেকে রক্ষা করবেন এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এই প্রতিশ্রুতি যেমন বেদে আছে তেমনি শ্রীমদ্ভগবদগীতাতেও আছে, শ্রীচণ্ডীতেও আছে, রামায়ণেও আছে, মহাভারতেও আছে। ধর্মই ধার্মিককে রক্ষা করে। আমরা বেদ-পুরাণাদি শাস্ত্রে এর অসংখ্য দৃষ্টান্ত পাই। মার্কণ্ডেয় পুরাণের অন্তর্গত শ্রীচণ্ডীতে আছে, দেবতাদের দ্বারা স্তবস্তুতির পর দেবী মহামায়া সকল জীবকে রক্ষার্থে অভয় দান করেন। তিনি স্বয়ং প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন, ভাবিকালেও তিনি আসুরিক শক্তির বিনাশে বিভিন্ন রূপে আবির্ভূতা হবেন। আবির্ভূতা হয়ে সকল আসুরিক সঙ্কট থেকে সন্তানদের পরিত্রাণ করবেন।
“দেবীর বললেন, বৈবস্বত মনুর অধিকারসময়ে ( সপ্তম মন্বন্তরে ) অষ্টাবিংশতি- সংখ্যক চতুর্যুগে ( কলি ও দ্বাপরের সন্ধিতে ) শুম্ভ ও নিশুম্ভ নামক অন্য মহাসুরদ্বয় উৎপন্ন হবে। তখন নন্দগোপগৃহে যশোদার গর্ভে জন্মগ্রহণকরে বিন্ধ্যাচলে অবস্থান করে আমি সেই দুই অসুরকে সংহার করব।
পুনরায় আমি অতি ভয়ঙ্করা মূর্তিতে পৃথিবীতে আবির্ভূতা হয়ে বিপ্রচিত্তিবংশীয় দানবগণকে বধ করব। সেই সকল উগ্রভাব বিপ্রচিত্তি বংশের অসুরদের ভক্ষণ করে নাশ করার সময় আমার দন্তসকল দাড়িম্বকুসুমের মত রক্তবর্ণ হবে। এইজন্য স্বর্গে দেবতারা ও ভূলোকে মানবেরা স্তব করার সময় আমাকে সতত ‘রক্তদন্তিকা’ নামে কীর্তন করবে।
পুনরায় শতবর্ষব্যাপী অনাবৃষ্টিহেতু পৃথিবী জলশূন্যা হলে মুনিগণের স্তবে আমি অযোনিসম্ভবা হইয়া আবির্ভূতা হব। তখন স্তবকারী মুনিগণকে শতনয়নে নিরীক্ষন করব। সেইজন্য মানবগণ আমাকে শতাক্ষী বলে কীর্তন করবে । হে দেবগণ! অনন্তর আমি নিজদেহজাত জীবনধারক পত্রাদি শাক দ্বারা যতদিন না বৃষ্টি হয়, ততদিন পর্যন্ত সমগ্র জগত পালন করিব। তখন পৃথিবীতে আমি শাকম্ভরী নামে বিখ্যাত হব । আর সেই সময়ে আমি দুর্গম নামক মহাসুরকে বধ করে আমি দুর্গাদেবী নামে প্রসিদ্ধা হব।
পুনরায় যখন হিমালয়ে আমি ভীমামূর্তি ধারণপূর্বক মুনিদের রক্ষার জন্য রাক্ষস বিনাশ করব তখন মুনিরা প্রণতভাবে আমার স্তব করবেন। এই জন্য আমি ‘ভীমাদেবী’ নামে বিখ্যাত হব।
যখন অরুন নামক অসুর ত্রিভুবনের মহা বিঘ্ন উৎপন্ন করবে , তখন আমি অসংখ্য ভ্রমর বিশিষ্ট আকৃতি ধারণ করে ত্রিভুবনের মঙ্গলহেতু সেই মহাসুরকে বিনাশ করবো। এইজন্য সকলে আমাকে ভ্রামরী বলে স্তব করবে।”
শ্রীচণ্ডীর একাদশ অধ্যায়ে আগামীতে দেবী বিভিন্নরূপে আবির্ভূতা হওয়ার প্রতিশ্রুতির অন্তিমে দেবী এক শাশ্বত অভয়বাণী প্রদান করেন। এ সকল আসুরিক বাধা দূর করে ধর্ম সংস্থাপনের অভয়বাণীটি শ্রীমদ্ভগবদগীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বর্ণিত ধর্মসংস্থাপনে সাথে সম্পূর্ণভাবে মিলে যায়। গীতায় বলা হয়েছে, জগতে অধর্মের বাড়বাড়ন্ত হলেই, ধর্ম সংস্থাপনের জন্য ভগবান স্বয়ং আবির্ভূত হয়ে সাধুদের পরিত্রাণ করবেন। গীতার মত সেই রূপ শ্রীচণ্ডীতে দেবীও বলেছেন:
যখনই দানবদের প্রাদুর্ভাব হবে, তখনই দেবী আবির্ভূতা হয়ে দুষ্ট অসুরদের বিনাশ করবেন।এই একই প্রকারের আশ্বাস আমরা শ্রীমদ্ভগবদগীতার মধ্যেও দেখতে পাই। সেখানে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সুস্পষ্টভাবে বলেছেন:
“যখন যখনই ধর্মের গ্লানি হয়ে অধর্মের অভ্যুত্থান ঘটে, তখনই আমি নিজেকে সৃষ্টি করি, অর্থাৎ সাকাররূপে অবতীর্ণ হয়ে জনসমক্ষে প্রকটিত হই। এভাবেই যুগে যুগে সাধুদের পরিত্রাণ করি এবং দুষ্কৃতীদের বিনাশ করে ধর্মসংস্থাপন করি।”
যখনই ধর্মের গ্লানি এবং অধর্মের অভ্যুদয় হয়, তখনই দেবী নানা বেশ ধারণ করে, নানা রূপে আবির্ভূতা হন। অসুরদলনে নানা বেশ ধারণ করে, নানা রূপে আবির্ভূতা হওয়ার বিষয়টি শ্রীমদ্ভগবদগীতাতে তো রয়েছে, এর সাথে সাথে দেবীভাগবতের সপ্তম স্কন্ধের অন্তর্ভুক্ত ‘দেবীগীতা’ নামক শাক্ত গ্রন্থেও বর্ণিত হয়েছে।
“হে ভূধর! যে যে সময়ে ধর্মের গ্লানি এবং অধর্মের অভ্যুদয় হয়, অর্থাৎ শ্রুতি-স্মৃতির নির্দিষ্ট ধর্ম-কর্ম পরিত্যাগ করে অপর শাস্ত্রগ্রন্থ আশ্রয় করে ধর্মের নামে অধর্ম করতে শুরু করে তখনই অধর্মকে বিনাশ করতে ভূমণ্ডলে আমি আসি নানা বেশ ধরে, নানা রূপে আবির্ভূতা হই।
বেদে আমার অনুশাসন মেনে যারা ধর্মকর্ম করে না, তাদের শিক্ষার জন্যই আমিই সৃষ্টি করেছি নানারকমের নরক। সেইসব নরকের কথা শুনলে ভয়ে তাদের চিত্ত অবশ হয়ে যাবে।”
বিভিন্নরূপে দেবী এ জগতে আবির্ভূতা হবেন সাধুদের রক্ষার্থে এবং অসুরদের বিনাশে। শ্রীচণ্ডীতেই দেবীকে মহীস্বরূপা বা পৃথিবীস্বরূপা বলা হয়েছে। জগতে বিভিন্নরূপে তিনি আসবেন। শতবর্ষব্যাপী অনাবৃষ্টির কারণে পৃথিবী জলশূন্যা হয়ে গেলে মুনিগণের স্তবে তিনি অযোনিসম্ভবা হয়ে আবির্ভূতা হয়ে স্তবকারী মুনিগণকে শতনয়নে নিরীক্ষন করবেন। শতনয়ন শব্দটি অনন্ত নয়ন অর্থে ব্যবহৃত। এ শতনয়ন রূপের জন্যে সকল মানুষ তাঁকে শতাক্ষী নামে অভিহিত করবে । এরপরে তিনি নিজদেহ থেকে জীবনধারক শাক উৎপন্ন করে যতদিন বৃষ্টি না হয়, ততদিন পর্যন্ত সমগ্র জগত পালন করে শাকম্ভরী নামে বিখ্যাত হবেন। শাক বলতে বর্তমানে আমরা কোন গাছের পাতাকে বুঝি; কিন্তু শাস্ত্রে শাক শব্দটি পত্র, মূল, কাণ্ড, ত্বক, পুষ্প ইত্যাদি দশপ্রকার। এ জগতের জড়চেতন সকল বস্তুর উপাদান কারণ যেমন দেবী; তেমনি সকল জগতকে পরিচালনার নিমিত্ত কারণও তিনি।অর্থাৎ তিনিই জগতের মধ্যে যেমন আছেন, তেমনি জগতকে পরিচালনাও করছেন। আবার দুর্ভিক্ষ অনাবৃষ্টি পীড়িত অবস্থায় নিজদেহ থেকে অন্ন উৎপন্ন করে জীবকে রক্ষা করেন। এ সকলই তাঁর মায়া, সকলই তাঁর ইচ্ছা এবং সকলই তাঁর লীলা। এক হয়েও লীলা আস্বাদিতে তিনি জগতে বহুধামূর্তিতে আবির্ভূতা হত। সে সকল বহুধা মূর্তি দেখে আমরা বিভ্রান্ত হয়ে যাই। তাঁকে বহু মনে করি। কিন্তু তিনি আদতে একজনই।
দেবীর অনন্ত নামের মধ্যে ‘দুর্গা’ নামটি অত্যন্ত প্রসিদ্ধ। দুর্গম নামক মহাসুরকে বধ করেই দেবী দুর্গা নামে অভিহিত হবেন। হিমালয়ে ভয়ংকর ভীমামূর্তি ধারণপূর্বক আসুরিক শক্তি হতে মুনিদের রক্ষা করার জন্য দেবী ‘ভীমাদেবী’ নামে খ্যাত হবেন। অরুণ নামক অসুর ত্রিভুবনের মহা বিঘ্ন উৎপন্ন করলে, দেবী কোটিকোটি ভ্রমরের আকৃতি ধারণ করে অরুণাসুরকে বিনাশ করবেন। কোটিকোটি ভ্রমরের রূপ ধারণ করে ত্রিভুবনকে রক্ষা করার জন্যে দেবী ‘ভ্রামরী’ নামে আখ্যায়িত হবেন।
শাস্ত্রে বর্ণিত প্রতিশ্রুত বিভিন্ন রূপের বাইরে আদ্যাশক্তি মহামায়া বিভিন্নভাবে বিভিন্ন সময়ে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে আবির্ভূত হয়েছেন। তিনি শাস্ত্রীয় বর্ণনা অনুসারেই সর্বদা এসেছেন বিষয়টি ঠিক এমন নয়। এর বাইরেও তিনি সাত্ত্বিক স্বভাবের ব্যক্তিবর্গের বিপদে আবির্ভূতা হয়েছেন বিভিন্ন রূপে বিভিন্ন স্থানে। শুভশক্তির প্রয়োজনে ভক্তের আকাঙ্খা তাঁকে বারেবারে অচিন্ত্য অব্যক্ত থেকে ব্যক্ত করেছে মূর্তিমান করেছেন। একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে। শ্রাদ্ধশান্তিকর্মে নিয়ম হল- যতক্ষণ শ্রাদ্ধকর্ম সমাধা না হয় ততক্ষণ মৃতব্যক্তির উদ্দেশ্যে যিনি পারলৌকিক কৃত্যাদি করছেন সেই শ্রাদ্ধকর্তা আসন পরিত্যাগ করতে পারেন না। তবে শ্রাদ্ধকর্ম সমাধা না হওয়া পর্যন্ত যদি কখনো এমন হয় যে, শ্রাদ্ধকর্তা শ্রাদ্ধকর্মে বসে দেখছেন; চোখের সামনে তার একমাত্র শিশু সন্তান আগুন নিয়ে খেলা করতে করতে সেই আগুনে পরে গেছে। তখন তিনি কি করবেন? শাস্ত্রীয় বিধান অনুসারে আসনে শ্রাদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত বসে থাকবেন, নাকি দৌড়ে গিয়ে আগে সন্তানকে রক্ষা করবেন। তিনি অবশ্যই আগে সন্তানকে রক্ষা করবেন।
দেবীর একটি অন্য রূপ কাত্যায়নী। কার্তিক মাসের শক্লপক্ষে বিশেষ করে অষ্টমী, নবমী তিথিতে দেবীর পূজা করা হয়। ‘ক’ শব্দে ব্রহ্ম এবং ‘ক’ শব্দে শিব; ব্রহ্মরূপ সজিবকে ধারণ করে আছেন বলে, সেই মহাদেবীর নাম কাত্যায়নী। আবার মহর্ষি কাত্যায়ন সবার প্রথমে দেবীর পূজা করেছিলেন বলে, দেবীর এক নাম কাত্যায়নী। দেবীপুরাণে দেবীর এই কাত্যায়নী, রৌদ্রী, বিন্ধ্যবাসিনী,জয়ন্তী, অজিতা, বিজয়া, অপরাজিতা, মহিষঘ্নী, সিংহবাহিনী, কালী,কপালী,কপালিনীসহ আরও কয়েকটি দানবদলনী রূপের নামকরণের তাৎপর্য পাওয়া যায়।
” দেবীর ‘কাত্যায়নী’ নামপ্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ‘ক’ শব্দে ব্রহ্ম এবং ‘ক’ শব্দে শিব; অর্থাৎ ব্রহ্মরূপ শিবকে ধারণ করে আছেন বলে দেবীর নাম কাত্যায়নী।
দেবী ঘোর রৌদ্র কর্ম করে থাকেন, তাই তাঁর নাম ‘রৌদ্রী’। তিনি দেবগণের কার্য্যসিদ্ধির জন্য বিন্ধ্যাচলে অবতীর্ণ হয়ে মহাসুর ঘোরকে বিনষ্ট করে অদ্যপি সেই বিন্ধ্যাচলে বাস করেন বলে সেই মহাদেবীর নাম ‘বিন্ধ্যবাসিনী’।
দেবী সর্বত্র জয় লাভ করেন বলে, তাঁর নাম ‘জয়ন্তী’ । তাঁকে কেউ জয় করতে পারে না, তাই তাঁর নাম ‘অজিতা’। মহাবল পদ্মনামক দৈত্যরাজকে জয় করেছেন বলে, তাঁর নাম ‘বিজয়া’ এবং লোকে তখন থেকে আজও দেবীকে ‘অপরাজিতা’ নামে অবিহিত করে ।
দেবী কল্পান্তে সিংহে আরোহণ করে মহিষাসুরকে বিনষ্ট করেছিলেন, তাই তাঁর নাম ‘মহিষঘ্নী’ এবং ‘সিংহবাহিনী’।
দক্ষের অমানকালে তাঁর নাম ‘কালী’ হয়েছে, অথবা কালে সমস্ত পদার্থেরই কলন বা সংহার করেন বলে দেবগণ তাঁকে ‘কালী’ নামে অবিহিত করেছেন।তিনি সর্বদা হাতে ব্রহ্মকপাল ধারণ করেন কিংবা পালন করেন বলে তাঁর নাম কপালী ও কপালিনী।”
শ্রীচণ্ডীতে দেবীর প্রতিশ্রুত “ইত্থং যদা যদা বাধা দানবোত্থা ভবিষ্যতি” -এ ভাবটিই পাওয়া যায়, স্বদেশী আন্দোলনের যুগে খ্যাতিমান বাঙালি চারণকবি মুকুন্দদাসের লিখিত “ভয় কি মরণে” সংগীতে। কবি সংগীতটিতে শব্দের বিন্যাস অসাধারণভাবে সাজিয়েছেন। বিশেষ করে সংগীতটির,”তা থৈ তা থৈ থৈ দিমি দিমি দ্রম দ্রম” অংশটি। মনে হয় যেন দামামা বাজছে, ডমরু বাজছে, জয়ঢাক বাজছে, রণভেরী বাজছে, শঙখ বাজছে। আর এই সকল প্রলয়ঙ্কারী বাদ্যের তালে তালে মহাকাল এবং মহাকালী উন্মাদিনী হয়ে নাচছে।সাথে রয়েছে ভূত, পিশাচ এবং যোগিনীগণ। সে এক অভূতপূর্ব দানবদলনী নৃত্য।
“ভয় কি মরণে রাখিতে সন্তানে
মাতঙ্গী মেতেছে আজ সমর রঙ্গে
তা থৈ তা থৈ থৈ দিমি দিমি দ্রম দ্রম ।।
ভূত পিশাচ নাচে যোগিনী সঙ্গে ।।
ভয় কি মরণে রাখিতে সন্তানে
মাতঙ্গী মেতেছে আজ সমর রঙ্গে।।
দানব দলনী হয়ে উন্মাদিনী
আর কি দানব থাকিবে বঙ্গে ।।”
দেবী এ জগতে অনন্তবার অনন্তরূপে আবির্ভূতা হয়েছেন, জগতকে আসুরিক শক্তির প্রাদুর্ভাব হতে রক্ষা করতে। আমাদের মনে রাখতে হবে, আসুরিক শক্তি যতই ভয়ঙ্কর হোক, এর বিনাশ হবেই। শুধু ভয় পাওয়া যাবে না। আমরা ভয় পেয়ে যাই এবং ভয় পেয়ে নিজের প্রতি ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস হারিয়ে ফেলি। এ কারণে আসুরিক শক্তি আরও শক্তিশালী হয়ে আমাদের বেশি করে গ্রাস করতে উদ্যত হয়। কিন্তু ধৈর্যহারা না হয়ে শুধু এ বিষয়টিই স্মরণে রাখা প্রয়োজন যে, সর্বাবস্থায় ঐশ্বরিক শক্তি আমাদের রক্ষা করবেন।বিশ্বাসটি যদি আমাদের দৃঢ় থাকে, তবে অবশ্যই তিনি আমাদের যে কোন পরিস্থিতিতেই এসে রক্ষা করবেন। বিশ্বাসটি যদি সামান্য নড়বড়ে সুতা দিয়ে বাঁধা থাকে, যা সামান্য টানাহেঁচড়াতেই ছিঁড়ে যায় ; তবে তিনি কিভাবে আসবেন আমাদের রক্ষার্থে। বিশ্বাসের প্রদীপটি এমনভাবে প্রজ্জ্বলিত হতে হবে যে, প্রচণ্ড দমকা বাতাসেও যেন প্রদীপটি নিভে না যায়। সর্বদা মনে রাখতে হবে, ভয়ের কিছু নেই; অসুরেরা পরাজিত হবেই। আজ যাদের মনে হচ্ছে অনন্ত শক্তিশালী, একদিন তারাই তাদের এই পৈশাচিক ভাবাপন্নতার কারণে জগতে পুরাতত্ত্বে রূপান্তরিত হয়ে দৃষ্টান্তে পরিণত হবে।