Home - News Report - BRO-র চমক, এবার ভারত থেকেই সরাসরি যাওয়া যাবে কৈলাস তীর্থে!
দ্যা বেঙ্গল ট্রিবিউন: আগামী সেপ্টেম্বর মাস থেকে কৈলাস পর্বতে ভারত থেকে সরাসরি যেতে পারবেন তীর্থযাত্রীরা। এর আগ পর্যন্ত কৈলাস তীর্থে যেতে হলে তীর্থযাত্রীদের তিব্বত হয়ে যেতে হতো। সম্প্রতি কৈলাস তীর্থের জন্য রাস্তার কাজ শুরু করেছিল বর্ডার রোড অর্গানাইজেশন (BRO)। আগামী সেপ্টেম্বর মাস নাগাদ উত্তরাখণ্ডের পিথোরাগড় থেকে লিপোলেখ পাস ইন্দো-চায়না সীমান্ত পর্যন্ত কৈলাস রুটের এই প্রজেক্টের কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সনাতন ধর্ম অনুযায়ী, কৈলাস পর্বত ভগবান শিবের বাসস্থান হিসেবে পরিচিত। এছাড়াও, ব্রহ্মপুত্র নদ, সিন্ধু, সুতলজ ও কর্নালি নদীর উৎস এই কৈলাস থেকেই। আধ্যাত্মিক মার্গ অনুযায়ী, কৈলাস পর্বত হলো পৃথিবীর গর্ভগৃহ এবং পৃথিবীর কেন্দ্র। কৈলাসের একটি পয়েন্ট পর্যন্ত তীর্থযাত্রীদের আনাগোনা থাকলেও, মানুষের কৈলাসের চূড়ায় ওঠার চেষ্টা বারবার বিফল হয়েছে।
১১ শতকে মহাযোগী মিলেরোপা কৈলাসে উঠতে চেয়েছিল,তিনি ফিরে এসে অন্যদের ওখানে যেতে নিষেধ করেন। কৈলাস পর্বতের ভূপ্রকৃতি ও আবহাওয়ায় এমন কিছু আছে, যার প্রভাবে মানুষের চেহারায় বার্ধক্যের ছাপ দ্রুত ফুটে ওঠে। সাধারণভাবে মানুষের নখ-চুল যে হারে বাড়ে‚ কৈলাস পর্বতে অন্তত ১২ ঘণ্টা কাটালে নাকি এই বৃদ্ধির হার দ্বিগুণ হয়ে যায়। কৈলাসের পাদদেশে অবস্থিত মানসরোবর ও রাক্ষসতাল হ্রদ। দুটি হ্রদ পাশাপাশি হলেও, মানসরোবরে জলের শান্ত ও মিষ্টি এবং রাক্ষসতালের জল অশান্ত ও নোনা, যা প্রকৃতিমাতার সৃষ্টির এক অপূর্ব নিদর্শন!
রাশিয়ান বিশেষজ্ঞ আরনেস্ট মুলদাশেভ (Ernst Muldashev) কৈলাসের রহস্য ভেদের চেষ্টা করেছিলেন। তাঁর কয়েক মাস ধরে চলা এই অভিযানের অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি পরবর্তীতে “Where do we come from” বইটি লেখেন। সেই বইতে তিনি কৈলাস পর্বত এলাকায় তাঁর অলৌকিক অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। শক্তিশালী ম্যাগনেটিক ফিল্ড, অচেনা অতিপ্রাকৃত ঘটনা ইত্যাদির কারণে কৈলাসের পর্বতের ওপর দিয়ে এখনও পর্যন্ত বিমান চলাচল নিষিদ্ধ।
হিন্দু, বৌদ্ধ ও আরও বেশ কিছু আদিবাসী ধর্মে কৈলাস পর্বতের গুরুত্ব ও মান্যতা অপরিসীম। প্রতি বছর হাজার হাজার তীর্থযাত্রী অত্যন্ত কষ্ট করে তিব্বত হয়ে কৈলাস তীর্থে যাত্রা করতো। ভারতের বর্ডার রোড অর্গানাইজেশনের (BRO) তৈরী পিথোরাগড় থেকে লিপোলেখ পাস পর্যন্ত এই নতুন রাস্তা দিয়ে আগামী দিনে ভারত থেকেই সরাসরি কৈলাস তীর্থে যেতে পারবেন তীর্থযাত্রীরা। ফলে একদিকে যেমন তীর্থযাত্রীদের কষ্ট লাঘব হবে, তেমনি অন্যদিকে স্থানীয় এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়নে তা ভূমিকা রাখবে।